বিশ্বের প্রথম এক ডোজের ডেঙ্গু টিকা অনুমোদন দিয়েছে ব্রাজিল। বুধবার (২৬ নভেম্বর) অনুমোদনের পর কর্তৃপক্ষ এটিকে 'ঐতিহাসিক অর্জন' বলে বর্ণনা করেছে।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা এএনভিএসএ সাও পাওলোর বুটানটান ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত ‘বুটানটান ডিভি’ নামের এই টিকার ব্যবহার ১২ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে বিশ্বে একমাত্র অনুমোদিত ডেঙ্গু টিকা 'টিএকে০০৩'। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, তিন মাসের ব্যবধানে দুই ডোজ নিতে হয়।
ব্রাজিলে আট বছর ধরে পরিচালিত পরীক্ষার পর উদ্ভাবিত একক ডোজ টিকা দ্রুত ও সহজ টিকাকরণ কর্মসূচি চালাতে সহায়তা করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বুটানটান ইনস্টিটিউটের পরিচালক এস্পার কালাস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এটি ব্রাজিলে বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য খাতে এক ঐতিহাসিক অর্জন। যে রোগ আমাদের দশকের পর দশক ভোগাচ্ছে, এখন সেটিকে শক্তিশালী অস্ত্র দিয়ে মোকাবিলা করা সম্ভব।
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ১৬ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী অংশ নিয়েছে। নতুন টিকাটি গুরুতর ডেঙ্গু সংক্রমণের বিরুদ্ধে ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে।
ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিশ্বব্যাপী মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেড়ে চলেছে। ডেঙ্গু হলে তীব্র ফ্লু-সদৃশ উপসর্গ—প্রচণ্ড ক্লান্তি এবং শরীর ব্যথা হয়। ২০২৪ সালে বৈশ্বিকভাবে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছায়। গবেষকরা এটির বিস্তারের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
ডেঙ্গুর অস্বস্তিকর উপসর্গের কারণে এটিকে ‘ব্রেকবোন ফিভার’ নামে ডাকা হয়। গুরুতর ক্ষেত্রে এটি রক্তক্ষরণজনিত জ্বর ও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ডেঙ্গু সংক্রমণ এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এদের বিস্তার এখন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঞ্চলসহ এমন এলাকায়ও দেখা যাচ্ছে, যেখানে আগে সচরাচর দেখা যেত না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ৪৬ লাখেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ১২ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে - যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর অর্ধেক মৃত্যুই ঘটেছে ব্রাজিলে।























