
কুয়ালালামপুর: মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অবৈধ কর্মীদের জন্য অবশেষে আশার আলো দেখা দিয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র ও মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এমন একটি পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার মাধ্যমে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে অবস্থান করা কর্মীরা বৈধতা লাভ করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, নতুন এই সিদ্ধান্তের আওতায় কর্মীরা চাইলে তাদের বর্তমান নিয়োগকর্তা পরিবর্তন করে অন্য প্রতিষ্ঠানেও যোগ দিতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) মালয়েশিয়ার এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পরই এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে মালয়েশিয়ায় কর্মরত বহু বাংলাদেশি কর্মী, যারা নানা কারণে এতদিন ধরে আইনি জটিলতায় ভুগছিলেন, তারা একটি নতুন জীবন শুরু করার সুযোগ পাবেন।
বৈঠক শেষে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুতিন সাংবাদিকদের জানান, এখন থেকে কোনো বিদেশি কর্মীকে ফেরত পাঠানোর সময় নিয়োগকর্তাদের অবশ্যই সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে। যদি কোনো নিয়োগকর্তার অবহেলা বা ব্যর্থতার কারণে কর্মীরা কোনো ধরনের ক্ষতির শিকার হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি ভবিষ্যতে ওইসব নিয়োগকর্তার নতুন কর্মী নিয়োগের আবেদনের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। মন্ত্রীর এই ঘোষণা অবৈধ কর্মীদের অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এছাড়াও, একই বৈঠকে মালয়েশিয়া সরকার প্রায় দশ লক্ষ বিদেশি কর্মী নিয়োগের বিষয়ে নীতিগতভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে, এই বিশাল সংখ্যক কর্মী ঠিক কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ করা হবে, সে বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকার এখনও বিস্তারিত কিছু জানায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রকাশ করা হবে, যা বাংলাদেশসহ কর্মী প্রেরণকারী অন্যান্য দেশগুলোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
মালয়েশিয়ার এই নতুন সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনীতিতে বিদেশি কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি, সেখানে কর্মরত অবৈধ কর্মীদের একটি আইনি সুরক্ষা দেবে। একইসাথে, কর্মীদের কোম্পানি পরিবর্তনের সুযোগ তাদের কাজের পরিবেশ এবং সুযোগ-সুবিধা উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়, মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াটি কত দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন করে।