
যশোর হর্টিকালচার সেন্টারের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে নানা জাতের উন্নত ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম এই উদ্যানটি এখন একটি সমৃদ্ধ সবুজ ভাণ্ডারে পরিণত হয়েছে।
যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে, আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রাচীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই হর্টিকালচার সেন্টার থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ও অপ্রচলিত দেশি-বিদেশি জাতের ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা উৎপাদন ও বিতরণ করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে সেন্টারে থাকা ১২০টি উন্নত জাতের মাতৃগাছ থেকে কলম তৈরি করে তা কৃষকদের মধ্যে সরবরাহ করা হচ্ছে।
কৃষকদের মতে, এখানকার চারার মান উন্নত হওয়ায় তাঁরা বাণিজ্যিকভাবে সফল বাগান গড়ে তুলতে পারছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো উদ্যানটি সার্বক্ষণিক পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছেন একদল প্রশিক্ষিত কৃষক। আধুনিক কলম পদ্ধতিতে মাতৃগাছ থেকে ডাল সংগ্রহ করে সেগুলো থেকে মানসম্পন্ন চারা উৎপাদন করছেন তাঁরা।
সেন্টারে কর্মরত কৃষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মূল কাজ মানসম্মত চারা তৈরি।
এখানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের ফলের গাছ রয়েছে, যেগুলোর মাতৃগাছ থেকে কলম তৈরি করে তা কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়।’
সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ দীপঙ্কর দাস জানান, চলতি বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় চারার চাহিদা বেড়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সেন্টারের চারা ও কলমের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৩০ হাজার, যা এরই মধ্যে অতিক্রম করেছে। এখন পর্যন্ত ১৭ লক্ষাধিক টাকার চারা বিক্রি হয়েছে।
এই উদ্যানটিতে রয়েছে ৫৫ ধরনের ফলের মাতৃগাছ। এর মধ্যে রয়েছে ৪২ প্রজাতির আম, যার মধ্যে ব্যানানা ম্যাংগো, বারি আম-৪, মিয়াজাকি, ব্রুনাই কিং ও অম্বিকার মতো উন্নত জাত রয়েছে।
সেন্টারের সহকারী উদ্যানতত্ত্ববিদ সাইদুর রহমান জানান, এখানকার চারার মান ভালো হওয়ায় যশোর ছাড়াও আশপাশের জেলাগুলো থেকে বাগান মালিকরা নিয়মিত চারা কিনে নিচ্ছেন। এখানে দেশি-বিদেশি ফল, বনজ ও ঔষধি গাছ ছাড়াও বিভিন্ন জাতের ফুলের চারা সরবরাহ করা হয়।
দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ও বৃক্ষরোপণ খাতে একটি নির্ভরযোগ্য আধুনিক কেন্দ্র হিসেবে যশোর হর্টিকালচার সেন্টার এখন সবুজ বিপ্লবের ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করছে।