ঢাকা   মঙ্গলবার
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
১৫ পৌষ ১৪৩২, ০৯ রজব ১৪৪৭

তিস্তায় নাব্য সংকট বন্ধ ২০ নৌপথ, বিপাকে হাজারো মানুষ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:০৬, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫

তিস্তায় নাব্য সংকট বন্ধ ২০ নৌপথ, বিপাকে হাজারো মানুষ

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী এখন মৃতপ্রায়। দীর্ঘ ৫৪ বছরেও কোনো খনন বা ড্রেজিং না করায় উজান থেকে আসা পলি ও বালু জমে নদী ভরাট হয়ে গেছে। ২০টি রুটে নৌ-চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। একসময়ের খরস্রোতা তিস্তা এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। চরাঞ্চলের যোগাযোগ ও অর্থনীতিতে নেমে এসেছে স্থবিরতা।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের বাদামের চরের ব্যবসায়ী আনছার আলী জানান, আগে যেখানে বড় বড় নৌকা চলত, সেখানে এখন ধু-ধু বালুচর। শহর থেকে মালপত্র আনা এখন অত্যন্ত কষ্টকর ও ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। চরের ভেতরে ঘোড়ার গাড়ি বা হাঁটা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

এদিকে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নৌ-শ্রমিক ও জেলেরা। হরিপুর চরের নৌ-শ্রমিক জরিপ মিয়া জানান, ১০ বছর আগেও তাঁর পাঁচটি নৌকা ছিল, এখন মাত্র একটি। নদী ভরাট হওয়ায় মাঝিরা বেকার হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

জেলে মন্টু মিয়া জানান, নদীতে পানি না থাকায় ১৫ বছর ধরে মাছ ধরা প্রায় বন্ধ। জীবন বাঁচাতে জেলেদের কেউ রিকশা-ভ্যান চালাচ্ছেন। অনেকেই ছোটখাটো ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছেন।

খনন না করায় তিস্তা তার মূল গতিপথ হারিয়ে অসংখ্য শাখা নদীতে বিভক্ত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফফাত জাহান তুলি জানান, নদী ভরাট হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি উপচে পড়ে নদীভাঙন তীব্র হয়। এতে প্রতিবছর শত শত ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম বলেন, ‘নদী খনন ও ড্রেজিং এখন সময়ের দাবি। এটি না করলে চরবাসীকে সারাবছরই এই কষ্ট সইতে হবে।’ গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, নদী খনন বা স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।