
ঢাকার ধামরাই উপজেলার বংশী নদীর ১৫টি স্থান থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন প্রভাবশালীরা। কয়েক বছর ধরে টানা বালু উত্তোলন করায় দুই পাশের ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকিতে রয়েছে নদীর পারের বসতবাড়ি। প্রশাসন অভিযান চালালেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বংশী নদীর পানকাত্তা, শাসন, আমছিমুর, গাওতারা, বালিয়া, চৌহাট, জেঠাইল, ভাকুলিয়া, রাজাপুরসহ প্রায় ১৫টি স্থানে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। পানকাত্তা এলাকায় শাহিন, শাসন এলাকায় দোলন মিয়া, ভাকুলিয়া এলাকায় পলাশ, রাজাপুর এলাকায় সাইফুল ইসলাম বালু উত্তোলন করে আসছেন। তাঁরা বিভিন্ন গ্রামের লোকজনের নিচু জমি, খাদ ও পুকুর ভরাট করে দিচ্ছেন লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে। টাকার বিনিময়ে অন্যের জমি ভরাটের জোগান দিতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে গৃহহীন ও ভূমিহীন করা হচ্ছে।
দিনরাত সমানতালে বালু উত্তোলন চলমান রয়েছে। বালু উত্তোলনের ফলে নদীতীরের ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন দলীয় সরকার ক্ষমতায় না বসলেও বিএনপির নেতাকর্মীদের মদদে বংশী নদী থেকে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে।
মাঝেমধ্যে প্রশাসন অভিযান চালালেও বন্ধ হচ্ছে না। কারণ হিসেবে স্থানীয়রা বলেন, অভিযানে কাউকে না পেয়ে শুধু বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত পাইপ ধ্বংস করা হয়। কিন্তু কোনো মামলা দেওয়া হয় না। মামলা দিলে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হতো। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগী আবুল কাসেম বলেন, ‘প্রায় ১০-১২ বছর ধরে পানকাত্তা এলাকায় মিনি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে আমারসহ প্রায় ১৫-২০ জন কৃষকের ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষমতার প্রভাবে বছরের পর বছর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন লিটন বালু উত্তোলন করেছেন। আর এখন উত্তোলন করছে বিএনপি নামধারী শাহিন গং।’
উপজেলা ভূমি অফিস থেকে জানা গেছে, ২০১২ সালে বংশী নদীর বালুমহাল নিয়ে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করে নাড়ি-ভুঁড়ি বের করে দেওয়া হয়। এরপর বালুমহাল ইজারা বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। এর পর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চলছে প্রভাবশালী মহল।’