ঢাকা   শনিবার
০৫ জুলাই ২০২৫
২০ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ মুহররম ১৪৪৭

আমন ধানের বীজ শোধন ও বীজতলা তৈরির বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ৩ জুলাই ২০২৫

আমন ধানের বীজ শোধন ও বীজতলা তৈরির বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি

উন্নত মানের অধিক ফলনশীল বীজ সংগ্রহ করুন, আমন ধানের বীজতলা তৈরি করুন এবং বৃষ্টির পানি ধরে রাখুন বীজতলা তৈরীর জন্য। 

বীজ শোধন ও জাগ দেওয়া
•    বীজ শোধন দুভাবে করা যায় শুকনো বীজ শোধন ও ভেজানো বীজ শোধন। কার্বেনডাজিম (৫০%) বা কার্বেনডাজিম (২৫%) + ম্যানকোজেভ (৫০%) মিশ্রণ ২ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১ কেজি বীজ সেই দ্রবণে ৮-১০ ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখতে হবে। জৈব ছত্রাকনাশক ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি ৪ গ্রাম প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে মিশিয়েও বীজ শোধন করা যায়। 

•    এরপর ঐ বীজ ছায়ায় শুকিয়ে নিয়ে জাঁক দিতে হবে। ধানের বীজ বস্তা থেকে বের করে তিন-চার ঘন্টা রৌদ্রে শুকিয়ে তারপর ছায়ায় রেখে স্বাভাবিক ঠান্ডা করতে হবে।

•    বপনের জন্য পুষ্ট ও সুস্থ বীজ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দশ লিটার পরিস্কার পানিতে ৩৭৫ গ্রাম ইউরিয়া সার ভালভাবে মিশাতে হবে। তারপর ১০ কেজি বীজ ছেড়ে দিয়ে হাতদিয়ে নেড়েচেড়ে দিলে পুষ্ট বীজ ডুবে নীচে জমা হবে এবং অপুষ্ট ও হালকা বীজ ভেসে উঠবে। হাত বা চালনি দিয়ে ভাসমান বীজগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। ভারী বীজ নিচ থেকে তুলে নিয়ে পরিস্কার পানিতে ৩-৪ বার ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। 

•    তারপর বীজ চটের বস্তায় ভর্তি করে পরিস্কার পানিতে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।

•    ২৪ ঘন্টা পর বস্তা সহ বীজ পানি থেকে তুলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ছাঁয়াযুক্ত স্থানে রেখে খর-কুটো দিয়ে ঢেকে জাগ দিতে হবে।

•    এভাবে জাগ দিলে আমন মওসুমে ৪৮ ঘন্টা বা দুই দিনের মধ্যে বীজের অঙ্কুর বের হবে এবং বীজতলায় বপনের উপযুক্ত হবে। 

বীজতলা নির্বাচন ও আদর্শ বীজতলা তৈরী
•    চারিদিকে খোলা, রৌদ্র ও সেচসুবিধাযুক্ত জমিতে বীজতলা তৈরী করা উচিৎ। আশেপাশের জমির থেকে একটু উঁচু জমি আমন ধানের বীজতলার জন্য আদর্শ।

•    ভালোমত চাষ-মই দিয়ে, জমি থকথকে কাঁদাময় তৈরী করে, তাতে ১.০-১.৫ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট প্রয়োজন মত লম্বা একাধিক বীজতলা তৈরী করা যেতে পারে।

•    প্রতি দুই বীজতলার মাঝে ৩০ সেমি নালা/ড্রেন রেখে, সেখান থেকে মাটি উঠিয়ে বীজতলা একটু উঁচু ও সমতল করে তৈরী করা যেতে পারে। চারা গজানোর পর দুই বীজতলার মাঝখান দিয়ে হাঁটাচলা করা, চারায় পানি সেচ ও অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা করা সহজতর হয়।

•    প্রতি বর্গমিটার বীজতলায় ৮০-১০০ গ্রাম হারে অঙ্কুরিত বীজ বেডের উপর সমানভাবে বুনে দিতে হবে। 

সারের পরিমাপ

দোআঁশ ও এটেল মাটি বীজতলার জন্য ভালো। বীজতলা যদি আনুর্বর হয় তবে প্রতি বর্গ মিটারে ১-১.৫ কেজি হারে জৈব সার হিসেবে পঁচা গোবর ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর জমিতে ৫-৬ সেন্টিমিটার পরিমাণে পানি দিয়ে ভালোভাবে মই দিয়ে চাষ দিয়ে ৭-১০ দিন রেখে দিতে হবে এবং পানি আটকে রাখতে হবে। এছাড়া হাইব্রিড ধানের ক্ষেত্রে সুস্থ ও সবল চারা পেতে হলে বীজ তলার প্রতি বর্গ মিটারে ৪ গ্রাম টিএসপি, ৭ গ্রাম এমওপি এবং বীজ বোনার দশ দিন পর ৭ গ্রাম ইউরিয়া ও ১০ গ্রাম জিপসাম সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন।

সর্বশেষ