
প্রতিটি জিনিসের একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। মানুষ, প্রাণী, উদ্ভিদ সব কিছুই একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিজেকে প্রকাশ করে। সময়ের বাইরেও কিছু কিছু ব্যতিক্রম দেখা যায় অনেক সময়। উদ্ভিদ জগতে কিছু ফুলের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়েছে।
রংপুর নগরীর বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে বসন্ত ঋতুর ফুল এখন মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। আবার কোথাও দেখা গেছে বর্ষার ফুল এই সময়ে নিজেকে মেলে ধরেছে। এসব প্রকৃতি প্রেমীদের মাঝে আনন্দের খোরাক হলেও অসময়ে এসব ফুল ফোটায় অনেকের মাঝে ভাবের উদয় হয়েছে। তারা ভাবছেন, ঋতুচক্রের পথ পরিক্রমায় প্রকৃতি কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলেছে। অসময়ের এসব ফুল দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্টাটাস দিয়ে কবি ও লেখক রানা মাসুদ বলেছেন, বসন্তের ফুল কনকচাঁপা এই হেমন্তে ফুটেছে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। বর্ষার কদম ফুটে আছে শহরের জিলা স্কুলের সামনে ও মুন্সিপাড়া গোরস্থানের কয়েকটি গাছে। পথ চলতে সেনপাড়া ও ক্রিকেট গার্ডেনের পাশের দুটি গাছে অল্প কিছু সোনালু চোখে পড়েছিল। কৃষ্ণচূড়ার দুই একটি গাছের সবুজে ছাওয়া পাতার ফাঁকে খুব সামান্য লালের উঁকি কোথাও চোখে পড়েছে। প্রকৃতির মধ্যে চাঞ্চল্য ঘটেছে নাকি অসময়ে সুসময় হয়ে এসেছে এসব? মানুষের জীবনের সবটাই অসময় কিংবা সুসময়ের না। অসময়েও সুসময় আসে- তা উপলব্ধি করতে হয়; বুঝতে হয় এবং ধরতে হয়।
জানা গেছে, কনকচাঁপা একটি দুর্লভ ফুল। এটি সাধারণত বসন্তকালে ফুটে থাকে। এখন হেমন্তকাল। এসময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে এই ফুলের দেখা পাওয়া যাবে। কদমফুল সাধারণত বর্ষাকালে দেখা যায়। বর্তমানে বর্ষা, শরত ঋতু চলে গিয়ে হেমন্তের পথ চলা শুরু হয়েছে। এসময় নগরীর বেশ কয়েকটি গাছে কদম ফুলের শোভা দেখা গেছে। কৃষ্ণচূড়া সাধারণত গ্রীষ্মকালে দেখা যায়। এসময় কৃষ্ণচূড়ার আবির প্রকৃত প্রেমীদের মাঝে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। গ্রীষ্মের সোনালুও এখন নিজেকে মেলে ধরেছে।
কৃষিবিদ ও লেখক আবিদ করিম মুন্না বলেন, কার্তিক ও অগ্রহায়ণ দুই মাস হেমন্তকাল। এ ঋতুতে ফোটে গন্ধরাজ, শিউলি, কামিনী, হিমঝুরি, দেব কাঞ্চন, রাজ অশোক, ছাতিম, সোনাপাতি, লতাপারুল, বকফুল ইত্যাদি। কিন্তু অসমের কনকচাঁপা, কদম, কৃষ্ণচূড়ার দেখে মনে হচ্ছে সত্যি এটি প্রকৃতির বিচিত্র খেয়াল।