সমুদ্র পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের এক বিশাল ভাণ্ডার। এ ভাণ্ডার থেকে বহু দেশ তাদের খাদ্য, অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পায়। বিশ্বের অনেক দেশই সমুদ্রের মাছের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
প্রথমেই উল্লেখযোগ্য জাপান, যাদের সংস্কৃতি ও খাদ্যাভ্যাসে মাছ একটি অবিচ্ছেদ্য উপাদান। সুশি ও সাশিমির মতো ঐতিহ্যবাহী খাবারে সমুদ্রের মাছ অপরিহার্য। জাপানের উপকূলীয় অঞ্চলে হাজারো জেলে পরিবার মাছ ধরার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে।
নরওয়ে ইউরোপের অন্যতম বড় মাছ রপ্তানিকারক দেশ। দেশটির উত্তর সাগরে পাওয়া কড, সালমন ও ম্যাকেরেল মাছ আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত জনপ্রিয়। পাশাপাশি উন্নত মাছচাষ ব্যবস্থার মাধ্যমে নরওয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে।
আইসল্যান্ড একটি ছোট দ্বীপদেশ হলেও তাদের অর্থনীতির প্রায় ৪০ শতাংশ আসে সামুদ্রিক মাছ থেকে। কড ও হেরিং মাছ আইসল্যান্ডের প্রধান রপ্তানি পণ্য।
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পুষ্টির বড় উৎস বঙ্গোপসাগরের মাছ। প্রায় এক কোটি মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতে জড়িত। চিংড়ি ও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ রপ্তানির মাধ্যমে দেশটি বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করে।
ছোট দ্বীপদেশ মালদ্বীপ সম্পূর্ণভাবে সমুদ্রের মাছের উপর নির্ভরশীল। টুনা মাছ তাদের প্রধান খাদ্য ও রপ্তানি পণ্য। সমুদ্রভিত্তিক মাছ ধরাই দেশের মানুষের প্রধান জীবিকা।
এছাড়া দক্ষিণ আমেরিকার চিলি ও পেরু বিপুল পরিমাণ অ্যাঙ্কোভি ও সার্ডিন মাছ ধরে, যা থেকে মাছের গুঁড়া (fishmeal) তৈরি করে রপ্তানি করা হয়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সমুদ্রের মাছ শুধু খাদ্য নয়, বহু দেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও জীবনধারার মূলভিত্তি। এই সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসইভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।























