শ্রীলঙ্কার কৃষিখাত ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে অন্যতম কারণ জৈব সারের পরিবর্তে রাসায়নিক সারের ব্যবহার। ২০২২ সালে দেশটির চরম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময় রাসায়নিক সারের অভাবে ফসল উৎপাদন একেবারে তলানিতে ঠেকে। যার ফলে মূলত দেখা দেয় দেশজুড়ে চরম খাদ্যাভাব। তবে রনিল বিক্রমাসিংহের সরকারের উদ্যোগে পুনরায় ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কান কৃষিখাত।
শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক ধসের অন্যতম কারণ দেশটির কৃষিখাতে চরম বিপর্যয়। ২০২১ সালে ফসলের জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহারে বিধি-নিষেধ আরোপ করে তৎকালীন রাজাপাকশে সরকার। পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহী করা হয় কৃষকদের। এতে করে হঠাৎ করেই কমে যায় জমির উর্বরতা। তলানিতে নামে ফসল উৎপাদন। যার পরিণতি চরম খাদ্য ঘাটতি। আকাশ ছোঁয়া দর হয় খাদ্য পণ্যের।
কৃষকরা যখন রাসায়নিক সার ব্যবহারে করতে পারেনি, জমিতে ফসল উৎপাদনের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। অনেক কৃষক অবৈধ উপায়ে বেশি দাম দিয়ে সার কেনে। এতে করে তাদের আয়ের চেয়ে দ্বিগুণ অর্থ খরচ হয়ে যায়।
মূলত বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ঋণের কারণে সার আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তৎকালীন সরকারের এ সিদ্ধান্ত। এতে করে শুধু কৃষকরাই বিপদে পড়ে তা নয়, খাদ্যাভাব দেখা দেয় দেশটির ২ কোটির বেশি মানুষের। বাধ্য হয়ে প্রতিবেশী ভারতের কাছ থেকে চাল ও গম আমদানি করতে। ২০২২ সালে ভারতসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে ৭ লাখ ৮৩ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করে শ্রীলঙ্কা।
যদিও এর পরের দুই বছর শ্রীলঙ্কায় চাল আমদানির পরিমাণ কমেছে উল্লেখযোগ্যহারে। এর কারণ হিসেবে দেশটির কৃষকরা জানিয়েছে, রাজাপাকশে সরকারের পতনের পর রনিল বিক্রমাসিংহে সরকার জৈব সারের পাশাপাশি রাসায়নিক সার ব্যবহারে বিধি-নিষেধ উঠিয়ে নেয়।
শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার রাসায়নিক সার ব্যবহারে বিধি-নিষেধ উঠিয়ে নেয়। এতে করে কৃষকরা পুনরায় ফসল থেকে আয় করতে সক্ষম হয়। এখনও শ্রীলঙ্কার কৃষকরা পুরোপুরি ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি। খাদ্যাভাব কমাতে ফসল উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে।
শ্রীলঙ্কার কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, জৈব সারের পরিবর্তে রাসায়নিক সার ব্যবহারে দেশটিতে ২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে সার আমদানি বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। বেড়েছে খাদ্যশস্য উৎপাদনও। ঘুরে দাঁড়িয়েছে লঙ্কান কৃষিখাত।























