টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে রবি মৌসুমে তীব্র সার সংকট দেখা দিয়েছে। বাজারে বাজারে ডিলারের দোকানে ঘুরেও সার না পেয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। চলতি রবি মৌসুমে এ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নের ৩৯ হাজার ৭৯৭ হেক্টর জমিতে রবি ফসলের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমিতে আবাদকৃত রবি ফসলের জন্য নভেম্বর মাসে এ উপজেলায় দুই হাজার ৪৭৮ মেট্রিকটন সারের চাহিদা রয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছেন।
জানা গেছে, এ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে বিসিআইসি ১৫ জন এবং বিএডিসি ২২ জন ব্যবসায়ীকে সারের লাইসেন্স দিয়েছে। বিসিআইসি শুধু ইউরিয়া সার এবং বিএডিসি থেকে ডিএপি, এমওপি, টিএসপি, জিপিসাম,জিংক সালফেট, ম্যাগ সালফেট, বোরন ও সালফেট সার ডিলারদের সরবরাহ করে থাকেন।
চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষা ১৪ হাজার হেক্টর, বোরো ২১ হাজার ৭৩৮, সবজি এক হাজার ৪৩০, গম ২১০, ভুট্টা ৫৫৫, আলু ৪৮০, মিষ্টি আলু ৪৭, চিনা বাদাম ৫, সূর্যমুখী ১১, মুশুর ডাল ২৫, খেসারী ৯০, মাসকলাই ১৩৫, পেয়াজ ৪০, রসুন ৪০, মরিচ ১২০, ধনিয়া ৮০ ও কালোজিরা ১ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হবে। এসব জমিতে রবি ফসল আবাদে ইউরিয়া এক হাজার ১৬১ মেট্রিকটন, টিএসপি ১৩৫, ডিএপি ৬৬০, এমওপি ৩০০, জিপসাম ১৩০, জিংকসালফেট ৩০, ম্যাগ সালফেট ৩০, বোরন ৩০ ও এ্যামো সালফেট ২ মেট্রিকটন সারের চাহিদা রয়েছে।
উপজেলা সদরের পুষ্টকামুরী, পাহাড়পুর, সরিষাদাইর, ভাওড়াসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে সার সংকট নিয়ে কৃষকদের চরম হতাশা। সারের জন্য কৃষক উপজেলার বিভিন্ন বাজারে সারের দোকানে দোকানে গিয়েও সংগ্রহ করতে পারেনি।
পৌর এলাকার পাহাড়পুর গ্রামের কৃষক মো. হান্নান মিয়া বলেন, তিনিসহ তার ভাইয়েরা প্রায় ২০০ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করবেন। মির্জাপুর বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরেও তিনি সার পাননি। এভাবে সংকট চলতে থাকলে আবাদ ব্যাহত হবে, ফসলের ফলন কমবে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।
ভাওড়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মো. ময়নাল হক জানান, সরিষার আবাদের সময় (জমির বাইন) চলে যাচ্ছে। কার্তিক মাসের শেষ থেকে অগ্রহায়ণ মাসের ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে এ আবাদ করতে হয়। সার সরবরাহ না থাকলে অনেক কৃষক আবাদ করতে পারবে না। এতে জমি পতিত থাকবে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঘাটতি হবে। এতে জাতীয় ভাবে এর প্রভাব পড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
ফতেপুর বাজারের ডিলার স্বপন কুমার সাহা বলেন, অল্প লাল সার আছে। সাদা সার বর্তমানে নেই, তবে রাতে আসবে বলে তিনি জানান।
মির্জাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদা খাতুন বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে সার সংকট কেটে যাবে। ডিলাররা ডিও দিয়ে রেখেছেন। পরিবহন সংকটের কারণে সার সরবরাহ করতে তাদের বিলম্ব হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।























