‘কাঁচি, খাতা, কলম, গাম, একটা চিমটা সেই সেঙ্গ নিজের ইচ্ছাশক্তি আর চোখের পাওয়ার এটাই আমার ধান গবেষণার যন্ত্র।’ কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার চাটকিয়া গ্রামের ধান গবেষক সেন্টু হাজং। ২৩ প্রজাতির ধান উদ্ভাবন করেও কোনো স্বীকৃতি পাননি তিনি। এর পরও থেমে যাননি, নিজ উদ্যোগে চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষণা।
জানা যায়, সেন্টু হাজং ২০০৬ সালে বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের সহায়তায় নতুন ধান উদ্ভাবনের প্রশিক্ষণ নিয়ে ধান গবেষণায় যুক্ত হন। পরে তিনি সংকরায়ণের মাধ্যমে ধানের নতুন বীজ উদ্ভাবন করেন। সেন্টু হাজং তাঁর নিজস্ব দক্ষতায় এরই মধ্যে ২৩ প্রজাতির ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন, যা এ উপজেলা, ঝিনাইগাতীসহ আরো বেশ কিছু এলাকায় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কারিতাসের প্রকল্পগু বন্ধ হয়ে যায় অনেক বছর আগে, কিন্তু সেন্টু তাঁর কাজ বন্ধ করেননি।
জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে স্বশিক্ষিত এই ধানবিজ্ঞানীর ধানের জাতের অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহবান জানান হানিফ সংকেত। এরপর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়েছে, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। চাটকিয়া গ্রামের কৃষক স্বর্ণকান্ত বর্মণ (৪৮) বলেন, ‘আমাদের কয়েক ইউনিয়নের মধ্যে সেন্টু জাতের ধান ছাড়া অন্য কোনো ধান নাই। কারণ সেন্টুর আবিষ্কার করা জাতের ধানের ফলন খুব ভালো।
সেন্টু আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমি ২০১০ থেকে আমার উদ্ভাবিত ধান কৃষকের হাতে তুলে দিচ্ছি। এখনো নিজের উদ্যোগেই কাজ করছি। আমি স্বল্প শিক্ষিত মানুষ। এত লাইন-ঘাট বুঝি না কোথায় কী করতে হবে! যদি কৃষি বিভাগ আমাকে সহযোগিতা করে আমাকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিত এবং আমার কাজে সহযোগিতা করে, তাহলে আমি আরো এগিয়ে যেতে চাই।’
এ বিষয়ে জেলার বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা সুলতান আহাম্মেদ বলেন, ‘সেন্টু হাজং আমাদের কাছে আবেদন জানালে আমরা তাঁকে সহযোগিতা করব।























