দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থী সম্পৃক্ততা, সচেতনতা কার্যক্রম এবং সহজলভ্য বিকল্প সরবরাহের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করতে হবে। সুবিধানির্ভর সংস্কৃতি ত্যাগ করে নতুন প্রজন্ম এগিয়ে এলে তা শুধু প্লাস্টিক দূষণ কমাবে না; পাটসহ স্থানীয় শিল্প পুনরুজ্জীবিত করবে, জাতীয় অর্থনীতি শক্তিশালী করবে এবং পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করবে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘টেকসই প্লাস্টিকমুক্ত সামুদ্রিক পরিবেশ’ শীর্ষক ‘অ্যাওয়ারনেস বিল্ডিং অ্যান্ড ডিসেমিনেশন ক্যাম্পেইন’-এ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার থেকে টেকসই বিকল্পে যেতে সময়, পরিশ্রম এবং ভোক্তাদের আচরণগত পরিবর্তন অপরিহার্য। গত কয়েক দশকে গড়ে ওঠা ভোক্তা-অভ্যাস রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও এ ধরনের অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক সামগ্রী বাদ দিয়ে প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তুলতেও দীর্ঘমেয়াদি প্রাতিষ্ঠানিক অঙ্গীকার প্রয়োজন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের বিস্তৃত ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ভোক্তাদের প্লাস্টিকনির্ভরতা মূলত সুবিধা এবং ‘ফ্রি’ ধারণাজনিত ভুল বোঝাবুঝির ফল। বাস্তবে প্লাস্টিক উৎপাদনে শ্রম, বিদ্যুৎ, আমদানিকৃত যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালসহ নানা খরচ জড়িত থাকে, যার গোপন মূল্য পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থাকেই দিতে হয়।
তিনি বলেন, আজ শিক্ষার্থীদের মাঝে যে পরিবেশশিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, তা ভবিষ্যতের পরিবেশগত ফলাফল নির্ধারণ করবে। অতীত প্রজন্মের টেকসই জীবনধারা এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ত্যাগের আর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সুফল সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানানো অত্যন্ত জরুরি।
বঙ্গোপসাগর বিশ্বের নবম সর্বাধিক প্লাস্টিকদূষিত সামুদ্রিক অঞ্চল হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এটি বাংলাদেশে অতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যবহারের কারণে নয়; বরং দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও উজান থেকে ভেসে আসা প্লাস্টিক বর্জ্যের ফল।
তিনি সতর্ক করে বলেন, পুনর্ব্যবহার (রিসাইক্লিং) সমাধান হিসেবে জনপ্রিয় হলেও এটি অত্যন্ত জ্বালানি-নির্ভর ও রাসায়নিকভাবে জটিল। তাই প্লাস্টিক ব্যবহার কমানো, প্লাস্টিক পণ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা এবং উৎপাদকদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করাই অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।























