ঢাকা   মঙ্গলবার
২৮ অক্টোবর ২০২৫
১২ কার্তিক ১৪৩২, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

আবহাওয়ার বৈরিতায় ধানে ব্লাস্ট সংক্রমণের ঝুঁকি ফলন নিয়ে শঙ্কা

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৩০, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

আবহাওয়ার বৈরিতায় ধানে ব্লাস্ট সংক্রমণের ঝুঁকি ফলন নিয়ে শঙ্কা

আবহাওয়ার বৈরিতায় ঝিনাইদহে শেষ মুহূর্তে ধানে ব্লাস্ট সংক্রমণের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় ফলন নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে কৃষকের। সাধারণত দিন ও রাতের তাপমাত্রায় ১০ ডিগ্রি পরিবর্তন হলে ব্লাস্ট রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। বর্তমানে দিনে প্রচুর গরম আর রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে ঠান্ডা ও কুয়াশা বাড়ছে। যা ধানের শীষ ও পাতায় ব্লাস্ট সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকগুণ।

ব্লাস্ট সংক্রমণ হলে ধানের গিঁট ও শীষের সংযোগস্থলে ছত্রাকের আক্রমণ হয়। এতে ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা হয়ে যায়। ব্লাস্ট একবার সংক্রমিত হলে দ্রুত বিস্তার লাভ করে। সে ক্ষেত্রে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে ধান থোড় ও দুধ অবস্থায় এই রোগ বেশি ক্ষতি করে থাকে। 

কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে সদর উপজেলায় ২৫ হাজার ২৫২ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ৪০ শতকের বিঘায় ফলন ভালো হলে গড়ে ৩০ মণ হারে ধান পাওয়া যায়। বর্তমানে বিভিন্ন এলাকার মাঠে ধান গাছ কাইচ থোড় ও শীষের ধান দুধ অবস্থায় রয়েছে। সদর উপজেলার হলিধানী এলাকায় কয়েকটি ক্ষেতে কিছু গাছে পাতা ও শীষে সংক্রমণ হলেও তা প্রাথমিক পর্যায়ে। কিছু ক্ষেতে দমনও করা গেছে।

হলিধানী এলাকার কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, তিনি ২২ কাঠা জমিতে ধান আবাদ করেছেন। কয়েকদিন আগে দেখতে পান গাছের গোড়ার পাতাগুলো পুড়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রথমে দু-একটি গাছে থাকলেও এখন অনেকগুলো গাছেই এমন হচ্ছে। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানান এটি ব্লাস্ট সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়। তাই জমিতে কিছু ছত্রাকনাশক ছিটিয়েছেন। এখন কি ঘটে দেখার অপেক্ষায় আছেন।

পার্শ্ববর্তী রাধাকান্তপুর এলাকার মাঠে দুই একর জমিতে ধানের আবাদ করেছেন কৃষক আব্দুর রহিম বাদশা। তিনি বলেন, এখন মাঠে ধানের অবস্থা ভালো, যদিও পোকার সংক্রমণ তুলনামূলক বেশি। বর্তমানে দিনে গরম আর রাতের ঠান্ডায় ব্লাস্ট সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় ফলন নিয়ে শঙ্কায় আছেন তিনি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-এ-নবী বলেন, ধানের থোড় আসার এক সপ্তাহ আগে ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধ করা যায়। সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে ছত্রাকনাশক প্রয়োগেও উপকার হয়। 

কিন্তু সংক্রমণ একবার ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ন্ত্রণ খুবই কঠিন। কৃষকরা সচেতন থাকলে এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী ফসলের পরিচর্যা করলে ব্লাস্টের সংক্রমণের ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।

সর্বশেষ