ঢাকা   রোববার
১৯ অক্টোবর ২০২৫
৩ কার্তিক ১৪৩২, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৭

আখ ক্ষেতে সাথি ফসল দ্বিগুণ লাভে হাসছে চাষি

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:১১, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ০৮:১১, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

আখ ক্ষেতে সাথি ফসল দ্বিগুণ লাভে হাসছে চাষি


অন্য ফসলের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় আখ চাষে ঝুঁকছেন শস্যভান্ডারখ্যাত চন্দনাইশ উপজেলার কৃষকরা। ধান ও মৌসুমি সবজির পাশাপাশি লাভজনক ফসল হিসেবে আখ এখন কৃষকদের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎসে পরিণত হয়েছে।

কৃষকরা জানান, আখ রোপণের পর বিক্রির উপযোগী হতে সময় লাগে প্রায় ৯ মাস। প্রতি কানি জমিতে প্রায় ১০ হাজার আখ উৎপাদন হয়। আখ ক্ষেতে সাথি ফসল হিসেবে মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলুসহ নানা সবজি চাষ করা যায়; যা অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে। কৃষকদের ভাষায় ‘এক জমিতে দুই ফসল, তাই লাভও দ্বিগুণ।’

চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ১৩০ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে; যা গত বছরের তুলনায় ৫ হেক্টর বেশি। শঙ্খ নদ তীরবর্তী সাতবাড়িয়া, হাশিমপুর, বৈলতলী, বরমা, বরকল, কাঞ্চনাবাদ, জোয়ারা, পৌরসদর এলাকার হারলা, ধোপাছড়ি, দোহাজারী পৌরসভার চাগাচর, জামিজুরী ও জঙ্গল জামিজুরী এলাকায় ব্যাপক হারে আখের চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে সাতবাড়িয়া, হাশিমপুর ও বৈলতলী ইউনিয়নকে আখ চাষের প্রধান অঞ্চল হিসেবে ধরা হয়।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এক কানি জমিতে আখ চাষে গড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হলেও, বিক্রির সময় লাভ হয় প্রায় দ্বিগুণ। হাশিমপুর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে দুই কানি জমিতে রংবিলাস জাতের আখ লাগিয়েছি। খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা, বিক্রি করেছি তিন লাখ টাকায়। আখ কাটার পর একই জমিতে বরবটি, আলুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করি।’

চন্দনাইশের কৃষকদের উৎপাদিত ‘রংবিলাস’ জাতের আখ নরম ও রসালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় বাজার ছাড়াও এই আখ ট্রাকযোগে প্রতিদিন চট্টগ্রাম নগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। দোহাজারী পৌরসভার হাছনদন্ডি এলাকার কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘চন্দনাইশের আখের ফলন খুব ভালো হয়। পাইকাররা কানি হিসেবে পুরো ক্ষেত আগাম ক্রয় করে নেন। পরে সুবিধা মতো সময় ট্রাকে করে আখ নিয়ে যান চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।’ 

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আজিমুশ-শানুল হক দস্তগীর জানান, আখ চাষের ইতিবাচক প্রভাব স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করেছে। ‘অনেক কৃষক এখন আখ বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। পাইকাররা সরাসরি মাঠ থেকে আখ কিনে নেওয়ায় কৃষকদের আর বাজারে যেতে হয় না’– বলেন তিনি। 

চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আজাদ হোসেন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আখের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। প্রতিবছর আখের চাষ বাড়ছে। কৃষকরা যাতে কোনো ধরনের ক্ষতির মুখে না পড়েন, সে জন্য মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও কীটনাশক বিতরণ করা হচ্ছে। ফলে আখ চাষ এখন অধিক লাভজনক ও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।’