ঢাকা   মঙ্গলবার
১৪ অক্টোবর ২০২৫
২৮ আশ্বিন ১৪৩২, ২১ রবিউস সানি ১৪৪৭

বেশি লাভের আশায় আগাম শীতকালীন সবজির চাষ শুরু

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ২ অক্টোবর ২০২৫

বেশি লাভের আশায় আগাম শীতকালীন সবজির চাষ শুরু

শীতকালীন সবজি ওঠার সময় নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস। ওই সময় আমদানি বেশি হওয়ায় ন্যায্যমূল্য পান না কৃষক। এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আগাম সবজি আবাদে ঝুঁকছেন তারা। আগে তুলতে পারলে দাম বেশি মেলে; চাহিদাও থাকে বেশি।

ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সেপ্টেম্বর থেকে আগাম শীতকালীন সবজির চাষ শুরু হয়েছে। মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি। শীত মৌসুম শুরু না হলেও বাজারে উঠতে শুরু করেছে কিছু আগাম সবজি। তবে দাম অনেক চড়া। আমদানি কম, দাম বেশি থাকায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক।

শিবনগর, আলাদীপুর, খয়েরবাড়ী, দৌলতপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শিম, মুলা, ফুলকপি, গাজর, বাঁধাকপি, বেগুন, করলা, কাঁকরোল, লাউ, লালশাক, ধনিয়া পাতার মতো আগাম শীতকালীন সবজি দেখা গেছে। উঁচু জমিতে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ভালো দাম পাওয়ার আশায় শীতের আগেই যাতে শীতকালীন সবজি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেন, সে চেষ্টায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। 

আলাদীপুর ইউনিয়নের ছোট ভিমলপুর গ্রামের হামিদুল ইসলাম এবার ৩৫ শতাংশ জমিতে আগাম জাতের কপি চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কপি বাজারজাত করতে খরচ হবে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। ২০-২৫ দিনের মধ্যে বাজারে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি কপির পাশাপাশি শিম ও শসার চাষ করেছেন। হামিদুল বলেন, ‘গত বছর এই জমিতে ২ লাখ ২০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করেছিলাম। এবারও ভালো কিছু আশা করছি।’
পৌর এলাকার উত্তর কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক মশিউর ৩০ শতাংশ জমিতে কপি আবাদ করেছেন। তিনি জানান, ২৫ দিনের মধ্যেই বাজারে তুলতে পারবেন। মৌসুমের শুরুতে সবজির দাম সবসময় বেশি থাকে। ভালো লাভের আশা করছেন তিনি।

আলাদীপুর ইউনিয়নের ভিমলপুর গ্রামের সবজি চাষি আলামিন হোসেন বলেন, এবার ৮০ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চারা রোপণ করেছেন। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই সেগুলো বাজারজাত করতে পারবেন এবং দামও ভালো পাবেন বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, ‘যে কোনো সবজি যদি মৌসুমের শুরুতে বাজারে তোলা যায়, তার দাম বেশি পাওয়া যায়। এরই মধ্যে আগাম জাতের শিম, মুলা, লালশাক, পুঁইশাক, করলা, পালংশাক, বরবটি, টমেটো, শসা উঠতে শুরু করেছে। পর্যাপ্ত দামও পাচ্ছি।’

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগাম জাতের সবজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫০ হেক্টর। এ ছাড়া এবার আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৮১০ হেক্টর।

উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা শাহানুর রহমানের ভাষ্য, আগাম সবজি চাষ লাভজনক। যে কোনো সবজি যদি মৌসুমের আগে বাজারে তোলা যায়, তার দাম একটু বেশিই মেলে। তাই অনেক চাষি আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন। এখানকার সবজি স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বিভিন্ন জেলায় যায়। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে সবজি চাষ ও রোগবালাই দূর করতে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।