ঢাকা   বৃহস্পতিবার
১৪ আগস্ট ২০২৫
২৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৯ সফর ১৪৪৭

২৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ এলসি খোলা হয়েছে মে মাসে

agri24.tv

প্রকাশিত: ১২:০৮, ২৫ জুন ২০২৪

২৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ এলসি খোলা হয়েছে মে মাসে

ডলার-সংকটে আমদানি পণ্যের ঋণপত্র (এলসি) খোলায় কড়াকড়ি আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর প্রভাবে ধারাবাহিকভাবে আমদানি কমেছিল। অনেক উদ্যোক্তা শতভাগ মার্জিন দিয়েও এলসি খুলতে পারেনি। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে এর কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। দীর্ঘ ২৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ এলসি খোলা হয়েছে গত মে মাসে। তবে একই সময়ে এলসি নিষ্পত্তি এপ্রিলের তুলনায় কিছুটা কমেছে। মে মাসে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৬ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খুলেছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয় আসা বৃদ্ধি পাওয়ায় ডলার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এরচেয়ে বেশি ৭ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল ২০২২ সালের জুন মাসে। এরপর থেকে এলসি খোলার হার সার্বিকভাবে ছিল কমার ধারায়। চলতি বছরের এপ্রিলে ৫ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। সে হিসাবে এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে এলসি খোলার পরিমাণ বেড়েছে ২০ শতাংশের বেশি। ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় মে মাসে এলসি খোলা বেড়েছে ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ। কয়েকটি ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী কর্মকর্তাদের মতে, মে মাসে ডলারের প্রবাহ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি ছিল। এর অন্যতম কারণ, ঐ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এমনিতে চলতি অর্থবছরে প্রতি মাসে গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ২ বিলিয়ন ডলারের কম। এছাড়া মে মাসে সার্বিক রপ্তানির পরিমাণ কমলেও ব্যাংকগুলোতে রপ্তানি আয় আসা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। মূলত আগে যে সব রপ্তানি করা হয়েছে, সেগুলোর আটকে থাকা পেমেন্ট আসতে শুরু করেছে ব্যাংকগুলোতে।

ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এলসি খোলার চাহিদা সবসময়ই ছিল। তবে আগে তারা আমদানি এলসি খোলার ক্ষেত্রে অনেক বেশি বাছ-বিচার করতেন। শতভাগ মার্জিন দিয়েও এলসি খোলা যাচ্ছিল না। কেউ পাঁচটি এলসি খুলতে এলে তারা মাত্র দুটি খুলতেন। তবে মে মাসে ডলারের প্রবাহ ভালো থাকায় আগের চেয়ে এলসি খোলার পরিমাণ বেড়েছে। গত ৮ মে তারিখে বিনিময় হারে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু হওয়ার কারণে রপ্তানিকারকেরা ডলারের দাম বেশি পাচ্ছে; ফলে তারা রপ্তানি আয় দেশে নিয়ে আসছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি তেল, সারসহ সরকারি আমদানির এলসি খোলা মে মাসে কিছুটা বেড়েছে, যেটি ব্যাংক খাতে বেশি এলসি খোলার অন্যতম কারণ।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে মোট ৬২ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খোলা হয়েছে। গত অর্থবছরের ১১ মাসে খোলা হয়েছিল ৬২ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলারের এলসি। সে হিসাবে এ সময়ে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এলসি খোলা সামান্য বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মে মাসে ব্যাংকগুলো আমদানি এলসির পেমেন্ট করেছে ৫ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার, যা এপ্রিলের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে ডেফার্ড এলসি পেমেন্টের চাপ আগের তুলনায় কমে এসেছে। কারণ এক্সচেঞ্জ রেট ঝুঁকি এড়াতে ব্যাংকগুলো ডেফার্ড এলসি খোলা কমিয়ে দিয়েছিল। এসব কারণে পেমেন্টও কমে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে মোট ৬০ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ কম।

সর্বশেষ