
পিরোজপুরে সড়কের পাশে বেড়ে উঠছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর শত শত আকাশমণি গাছ। গত ১৫ মে সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণির চারা তৈরি, রোপণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও খোদ বন বিভাগের নার্সারিতে সারি সারি করে বেডে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি আগ্রাসী এ গাছের চারা।
পিরোজপুর-খুলনা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কে কচা নদীর ওপর নির্মিত অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর (বেকুটিয়া সেতু) পিরোজপুর সদর উপজেলার কুমিরমারা অংশে সংযোগ সড়কের দুই পাশে দুই কিলোমিটার জায়গাজুড়ে রয়েছে কয়েকশ আকাশমণি গাছ। ২০২৩-২৪ সালে গাছগুলো রোপণ করে বন বিভাগ। ফসলি জমির পাশে রাস্তার ঢালে এসব গাছের বিরূপ প্রভাব ফেলছে ফসলের ওপর। নিষেধাজ্ঞার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও গাছগুলো ধ্বংসের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এদিকে জেলার বন বিভাগ পরিচালিত নার্সারিতে রয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি আকাশমণির চারা। নার্সারি থেকে এখনও ব্যক্তি পর্যায়ে এসব চারা বিক্রি করা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের কয়েকজন কর্মচারী জানিয়েছেন।
উদ্ভিদবিদ ও গবেষকরা বলছেন, আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাস গাছ মাটি থেকে বেশি পানি শোষণ করে ও মাটিকে রুক্ষ করে তোলে। গরু-ছাগল এ গাছের পাতা খায় না। এ গাছ জীববৈচিত্র্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এরপরও ক্ষতিকারক এসব গাছ কেটে ফেলা বা ধ্বংস করা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাঁদের।।
বন বিভাগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে– এখনও যে গাছগুলো রাস্তার পাশে, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাঠেঘাটে আছে, সেগুলোর ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা নেই সরকারিভাবে। ফলে আগের রোপণ করা গাছ দিন দিন বড় হয়ে উঠছে। এসব গাছ ও চারা ধ্বংসে সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগে থেকে তৈরি করা চারার বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা আসেনি।
সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ জানান, সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কের পাশে বন বিভাগের উদ্যোগে গাছগুলো লাগানো হয়েছে। তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় পরিবেশের ক্ষতিকারক এসব গাছ ধ্বংস করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ অস্বীকার করছেন জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চিন্ময় মধু। তার দাবি, নিষেধাজ্ঞার পর এসব গাছ রোপণ বা বিক্রি করা হচ্ছে না। তবে আগের রোপণ করা গাছ ও নার্সারিতে থাকা চারার বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। চারার বিষয়টি বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।