ঢাকা   মঙ্গলবার
১৪ অক্টোবর ২০২৫
২৮ আশ্বিন ১৪৩২, ২১ রবিউস সানি ১৪৪৭

নদীভাঙনে ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি বিলীন

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ১ আগস্ট ২০২৫

নদীভাঙনে ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি বিলীন

বেতাগী ইউনিয়নের কাউখালি গ্রামের আমির আলী জানান, কয়েক বছর ধরেই জমি হারাচ্ছি। গেল বর্ষায় কাপ্তাই বাঁধের পানির স্রোতে নিমেষেই সামনের দুটি ঘর বিলীন হয়ে যায়। যে ঘর দুটি কোনো রকমে রক্ষা পেয়েছে সেখানে এখন কোনো রকমে বসবাস করছি। পরিবার নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটে– কখন এ ঠাঁইটুকুও হারিয়ে ফেলি!

বদিউল আলম ও আমির আলীর মতো এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা, সরফভাটা, শিলক ও বেতাগী ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এই ৪টি ইউনিয়নে কর্ণফুলীর ভাঙনে ৬৪টি ঘর ও ৯৪ শতক ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। গত দুই বছরে ২৯৭টি ঘর ও দুই একর ৭০ শতক কৃষিজমি হারিয়েছে এখানকার বাসিন্দারা; এ তথ্য জানিয়েছেন উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আনিসুল ইসলাম। এ সংখ্যা আরও বেশি হবে, বলছেন সরফভাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। তাঁর দাবি, শুধু তাঁর ইউনিয়নেই দুই বছরে ১০২টি বাড়ি ও দুই একর ২২ শতক ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। চার ইউনিয়ন মিলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। 

বৃহস্পতিবার ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কর্ণফুলীতে তীব্র স্রোতের কারণে কাপ্তাই বাঁধের পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে চার ইউনিয়নের আটটি গ্রামজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। হুমকিতে রয়েছে তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আটটি মাদ্রাসা, ১২টি মসজিদ, তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক, তিনটি বাজার, কাঁচা সড়ক, ঈদগাহসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। 

সরফভাটা ইউনিয়নের মৌলানা গ্রামের আবদুল মান্নান জানান, চলতি বর্ষায় পশ্চিম সরফভাটা মৌলানা গ্রাম থেকে পুরাতন সিকদার হাট পর্যন্ত ৫০০ মিটার বিলীন হয়েছে। ঘরহারা হয়েছে ২০ থেকে ৩০ পরিবার। এভাবে ভাঙতে থাকলে মসজিদ- মাদ্রাসাসহ সরকারি-বেসরকারি অনেক স্থাপনা বিলীন হয়ে যাবে। 

বেতাগী ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম বলেন, আমার ইউনিয়নের তিন দিকেই কর্ণফুলী। বর্ষা এলেই ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন রোধে বেশ কিছু এলাকায় ব্লক বসানো হয়েছে। নদীপাড়ের মানুষকে রক্ষায় আরও ব্লক বসানো প্রয়োজন।  

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শিবান্দু খাস্তগীর জানান, নদীভাঙনের স্থানগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্লক বসানো হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, চার ইউনিয়নে নদীভাঙনে ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।