সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বাংলাদেশের নদী, উপকূলীয় অঞ্চল এবং খাবার পানিতে বিপজ্জনক মাত্রায় মাইক্রোপলুট্যান্টস শনাক্ত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের পৃষ্ঠজল, উপকূলীয় এলাকা এবং বাজারে পাওয়া পানির নমুনা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। শনিবার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব তথ্য উপস্থাপন করে গবেষকদল।
গবেষণা দলের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মোট ৭১টি পানির নমুনা এবং ২৩টি মাছের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এছাড়াও অন্তর্ভুক্ত করা হয় ঢাকা ওয়াসা ও বাজারের বোতলজাত ১৬টি পানির নমুনা। নমুনাগুলোতে ২০০টিরও বেশি পেস্টিসাইড, ৩০০ এর বেশি ফার্মাসিউটিক্যালস ও পার্সোনাল কেয়ার পণ্য এবং ১৬ ধরনের পিএফএএস শনাক্ত করা হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, পৃষ্ঠজলের নমুনাগুলোতে ফার্মাসিউটিক্যালসের মাত্রা পাওয়া গেছে প্রতি লিটারে ১০ থেকে ১ লাখ ন্যানোগ্রাম, পেস্টিসাইডস প্রতি লিটারে ৩০ থেকে ৪০ হাজার ন্যানোগ্রাম, এবং পিএফএস প্রতি লিটারে ৭৫ থেকে ১ হাজার ৭০০ ন্যানোগ্রাম। বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলের নমুনাগুলোতে দূষণের মাত্রা তুলনামূলক বেশি ছিল। একটি পানীয় জলের নমুনায় পিএফএএস পাওয়া গেছে প্রতি লিটারে ২ হাজার ৯০০ ন্যানোগ্রাম। মাছের শরীরেও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় দূষণ পাওয়া গেছে। ফার্মাসিউটিক্যালসের মাত্রা ছিল প্রতি গ্রামে ০ দশমিক ৪৫ থেকে ১৫ হাজার ন্যানোগ্রাম, পেস্টিসাইডস প্রতি গ্রামে ০ দশমিক ১ থেকে ১ হাজার ন্যানোগ্রাম এবং পিএফএএস প্রতি গ্রামে ০ দশমিক ১ থেকে ২০০ ন্যানোগ্রাম।
গবেষণা দল জানায়, তারা ইতোমধ্যে এসব দূষণের স্বাস্থ্যগত ও পরিবেশগত ঝুঁকি মূল্যায়নের কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন খাল, নদী ও পানীয় জলের উৎসে আরও নমুনা সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন সুইডেনের উমিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইয়ারকার ফিক। এছাড়া সেমিনারে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি রসায়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম, ড. তাজুল ইসলাম, ড. সিরাজুল ইসলাম, ড. আব্দুল কাইউম নদী ও উপকূলীয় অঞ্চলের পানিতে মাইক্রো দূষকের উপস্থিতি নির্ণয়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সাউরেস এর পরিচালক অধ্যাপক ড. এফ এম আমিনুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ। ড. মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপার্চায প্রফেসর ড. মো. বেলাল হোসেন এবং নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া। এছাড়াও সাংবাদিক ফাইজুল সিদ্দিকীর উপস্থাপনায় সেমিনারে বাংলাদেশের নদী উপকুলের মাইক্রোদূষক নিয়ে গবেষণার বিষয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।























