
ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতির জন্য একটি জাতীয় সমন্বয় কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা সুনীল অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ননের জন্য আরও শক্তিশালী শাসন ব্যবস্থা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
মঙ্গল ও বুধবার (১৩ ও ১৪ মে) ‘বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতি: নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থায় টেকসই অর্থনীতির জন্য বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক দুই দিন ব্যাপী একটি ওয়েবিনারে তারা এসব মতামতদেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি জাতীয় সমন্বয় কর্তৃপক্ষ গঠন করা হলে তা দেশের নীল ও সমুদ্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি ‘ওয়ান-স্টপ-সেন্টার’ হিসেবে কাজ করবে।
ওয়েবিনারটির আয়োজন করে সিমেক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার এবং অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সানশাইন কোস্টের দ্য সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনেউরশিপ (সিডসেল)।
ওয়েবিনারটি আয়োজিত হয় অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের বাংলাদেশে সুনীল অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণা ও নীতিমালা উন্নয়ন নামক পোস্ট-কোর্স কার্যক্রম হিসেবে। তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতি খাতে গবেষণা ও নীতিমালার উন্নয়ন।
অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস ফেলোশিপ প্রোগ্রামটি অর্থায়ন করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকারের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিভাগ। ওয়েবিনারটি এই ফেলোশিপের একটি পোস্ট-কোর্স কার্যক্রম।
ওয়েবিনারটিতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, গবেষক, শিক্ষাবিদ, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুনীল অর্থনীতি বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন- অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের বাংলাদেশে সুনীল অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণা ও নীতিমালা উন্নয়ন কোর্সের ফেলো- বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সচিব ড. সানওয়ার জাহান ভুঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস.এম. শামীম রেজা, সিমেক গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ফোয়ারা ইয়াসমিন, সিমেক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির পরিচালক ড. রতন কুমার রায়, সাবেবক অতিরিক্ত সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেন, আইডিএস গ্রুপের গ্রুপ সিইও ও হেড অব বিজনেস আবদুল্লাহ আল মাহের প্রমুখ।
অস্ট্রেলিয়ার সিডসেল এর তামি হ্যারিয়ট এবং অনুপম এজাজ ওয়েবিনারটির সহ-আয়োজক হিসেবে আলোচনা পর্বে অংশ নেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সিমেক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়কারী ড. শরিফুল ইসলাম।
সমাপনী বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, দেশীয় ও বৈদেশিক বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেমন বিশ্ব ব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে একটি কাঠামোগত পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠা করা। পাশাপাশি তিনি দেশীয়ভাবে একটি সুনীল অর্থনীতি প্রশাসনিক বিভাগ তৈরির প্রস্তাব দেন।
প্রথম দিনের আলোচনায় বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতিতে বিনিয়োগের সুযোগ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।
দ্বিতীয় দিনটি ছিল সুনীল অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত মূল অংশীজন, প্রভাবক এবং সমুদ্রের স্বাস্থ্য ও টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব নিয়ে বিশ্লেষণমূলক আলোচনা।
আলোচনার একটি প্রধান বার্তা ছিল- বাংলাদেশে সুনীল অর্থনীতি সম্পর্কিত কার্যক্রমগুলোর সমন্বয় সাধনের জন্য একটি একক জাতীয় কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রয়োজনীয়তা।
বক্তারা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সুনীল অর্থনীতি সেলসমূহের মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের আহবান জানান।
ওয়েবিনারের অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞরা সুনীল অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি নীতিপত্র (পলিসি ব্রিফ) প্রস্তুত করে তা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে উপস্থাপন করবেন বলে জানানো হয়।
এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে