
বরেন্দ্র জেলা নওগাঁর মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। জেলার অবারিত মাঠজুড়ে সোনালি রঙের পাকা ধানের আঁচল পাতা। বুকভরা আশা আর চোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে কৃষকরা তাদের সোনার ধান কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। এ বছর ফলন যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি মৌসুমের শুরুতেই আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ধান উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁ। বিশেষ করে এ জেলায় বোরো ধান সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়ে থাকে। এ বছর ১ লাখ ৯২ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া সবদিক থেকে অনুকূলে থাকার কারণে ধান উৎপাদন খুব ভালো হয়েছে।
জেলার সদর উপজেলার কীত্তিপুর এলাকার কৃষক কলিমুদ্দিন আলী জানান, এবার তিনি ২০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। এর মধ্যে চার বিঘা জমিতে চাষ করা জিরাশাইল জাতের ধান কাটা ও মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। বিঘা প্রতি ২৮ মণ করে ধানের ফলন হয়েছে। তিনি প্রতি মণ জিরাশাইল ধান বিক্রি করেছেন ১৩৫০ টাকায়। মৌসুমের শুরুতেই ধানের দাম ভাল পাওয়ায় খুশি তিনি।
পত্নীতলার বাসিন্দা কৃষক সোলাইমান আল রবি জানান, এ বছর অধিকাংশ জমিতে জিরাশাইল, কাটারিভোগ, নাজিরশাইল জাতের ধান চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি ফলন হচ্ছে ২৮ থেকে ৩২ মণ। আর বাজারে দাম ভালো থাকায় লাভবান হচ্ছেন তারা। তবে প্রথমে বাজার ভালো থাকলেও বর্তমানে মণ প্রতি ধানের দাম ১৫০-২০০ টাকা করে কমে গেছে।
তাদের অভিযোগ, ভরা মৌসুমে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দর কমায়। বাধ্য হয়ে কম দরে ধান বিক্রি করতে হয়। তাই বাজারে তদারকি বাড়ানো, পাশাপাশি ফলন ও উৎপাদন খরচ হিসাব করে সরকারিভাবে দর নির্দিষ্ট করে দেয়ার দাবিও জানান কৃষকরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ধান কাটতে আসা শ্রমিক কবিরুল ইসলাম ও ফারুক হোসেন বলেন, বোরো ধান কাটাকে কেন্দ্র করে এ জেলায় এক শ্রমবাজার গড়ে উঠেছে। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা এসেছেন ধান কাটতে। তারাও ৪০ জনের একটি দলের সাথে এসেছেন নওগাঁ জেলায় ধান কাটতে। তারা মণ প্রতি ৬/৭ কেজি ধান অথবা প্রতি বিঘা জমিতে ৬/৭ হাজার নগদ টাকা মজুরি হিসেবে নিয়ে থাকেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নওগাঁ জেলায় পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। চলতি বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বাজারে দামও বেশ ভালো। এক কথায় আবহাওয়া যদি ভালো থাকে তাহলে কৃষকরা বেশি লাভবান হবেন। চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এ থেকে ৮ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই কৃষকরা নিরাপদে তাদের উৎপাদিত ধান ঘরে তুলতে
এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে