ঢাকা   বৃহস্পতিবার
২৩ অক্টোবর ২০২৫
৭ কার্তিক ১৪৩২, ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

মাংস আমদানি করে দেশের ক্ষতি করতে চাই না:ফরিদা আখতার

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ২২ অক্টোবর ২০২৫

মাংস আমদানি করে দেশের ক্ষতি করতে চাই না:ফরিদা আখতার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশে অনেক দেশ স্বল্পমূল্যে গরুর মাংস রপ্তানির প্রস্তাব দিচ্ছে। কিন্তু মাংস আমদানি করলে দেশের খামারিরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কভাবে এগোচ্ছে।

বুধবার সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) আয়োজিত ২০২৪–২৫ অর্থবছরের বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা কেন মাংস আমদানি করবো? বরং দেশেই উৎপাদন খরচ কমিয়ে নিজেদের চাহিদা পূরণে কাজ করবো। মাংস আমদানি করে আমরা দেশের ক্ষতি করতে চাই না। তাই আমদানি নয়, উৎপাদন ব্যয় হ্রাসের মাধ্যমে মাংস ও ডিমের দাম কমানোর পথে আমরা অগ্রসর হবো।

ফরিদা আখতার বলেন, গবেষণার বাজেট ৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৩ কোটিতে নামিয়ে আনা হয়েছে—যা দেশের জন্য ক্ষতিকর। গবেষণায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকলে নতুন উদ্ভাবন ও উন্নয়ন কার্যক্রম থমকে যাবে। গবেষণার ফলাফল শুধু ইনস্টিটিউট পর্যায়ে সীমাবদ্ধ না রেখে মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দিতে হবে। এজন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এনজিওগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার ওপর তিনি জোর দেন।

মানুষ ও প্রাণীর পারস্পরিক স্বাস্থ্য সম্পর্কের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, যে রোগ প্রাণীর হয় তা মানুষের মধ্যেও ছড়াতে পারে, আবার মানুষের রোগও প্রাণীর মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে। তাই ‘ওয়ান হেলথ’ ধারণাকে গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি প্রাণীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও দেশীয় জাতের সংরক্ষণে আরও গবেষণার আহ্বান জানান।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ফরিদা আখতার বলেন, উন্নত দেশগুলো নিজেদের গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে না এনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর গবাদিপশুর ওপর দায় চাপাচ্ছে—এটি অন্যায্য। তারা গাড়িতে জ্বালানি পুড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করছে, অথচ দায় দিচ্ছে আমাদের গরুর ওপর।

অনুষ্ঠানে বিএলআরআই-এর মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান।

সচিব বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে—প্রাণীর সুস্থতা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। তিনি জানান, খামার পর্যায়ে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে অনেক প্রাণী অসুস্থ হয় এবং পরে সেগুলো জবাই করা হয়, যার মাংস খেয়ে মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, প্রাণীর নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত না হলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আমাদের জানতে হবে, অন্যান্য দেশে প্রাণীর খাবারে কী ব্যবহার হয়, কেন তাদের খরচ কম।