ইউরোপে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী রোগ বার্ড ফ্লু। জার্মানিতে এরইমধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার হাঁস-মুরগী নিধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। এদিকে, জার্মানির লিনাম শহরে মারা গেছে হাজারের বেশি সারস পাখি। জীববিজ্ঞানীদের আশঙ্কা বার্ড ফ্লু আক্রান্ত হয়েই এসব পাখির মৃত্যু হয়েছে।
গেলো এক দশকের মধ্যে ইউরোপের সর্বোচ্চ সংখ্যক দেশে দেখা দিয়েছে প্রাণঘাতী বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাব। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে। বার্ড ফ্লু আতঙ্কে হত্যা করা হচ্ছে লাখ লাখ হাঁস-মুরগি। যার প্রভাবে বেড়েছে খাদ্যের দাম।
ইউরোপের দেশ জার্মানিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বার্ড ফ্লু। এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে প্রচেষ্টা জোরদার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। নতুন ধরনের এইচফাইভএনওয়ান ফ্লু শনাক্তের পর জার্মানির একটি শহরের দুটি খামার থেকে ৫০ হাজার ব্রয়লার মুরগি ও ৮০ হাজার হাঁস নিধন করা হচ্ছে।
হাঁস-মুরগি নিধন করা এক ব্যক্তি বলেন, ‘১ লাখ ৩০ হাজার হাঁস-মুরগিকে আমাদের নিধন করতে হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক প্রাণি নিধনে অন্তত দুই দিন সময় লাগবে।’
অন্য আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘অনেক মৃত সারস এবং রাজহাঁসও উদ্ধার করেছি। অন্যান্য বন্য প্রাণীর মধ্যেও এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে আক্রান্ত প্রাণীগুলোকে নিধন করা হচ্ছে। এছাড়া, বার্ড ফ্লুর বিস্তার ঠেকাতে জার্মানির বিভিন্ন শহরে পাখিদের খাঁচায় রাখার নির্দেশনাসহ নানা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে প্রাদুর্ভাবকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে দেশটির প্রাণী রোগ গবেষণা কেন্দ্র।
এদিকে, হাঁস ও মুরগির পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা পাখির মধ্যেও বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ধরা পড়েছে। দেশটিতে এবারই প্রথমবারের মতো এ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছে সারস পাখি। জার্মানির উত্তর-পূর্বে অবস্থিত লিনাম শহরের তৃণভূমি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হাজারের বেশি মৃত সারস পাখি। স্বেচ্ছাসেবকরা এসব পাখি সংগ্রহ করে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
ব্র্যান্ডেনবার্গ পরিবেশ সংস্থার প্রধান জীববিজ্ঞানী নরবার্ট স্নিউইস বলেন, ‘গেলো ২৫ বছর ধরে পাখিদের এ পরিযায়ী স্থানটি পরিচালনা করে আসছি। তবে এর আগে কখনো এধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়নি। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ১ হাজারের বেশি সরস পাখির মৃত্যু সাধারণ কোনো ঘটনা নয়। অন্যান্য বন্য পাখিদের মধ্যেও বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।’
বিশেষজ্ঞরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন, পাখি বা হাঁস-মুরগি থেকে এ রোগ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।























