
চলমান তাপদাহের প্রভাবে বিপাকে পড়েছেন চাঁদপুরের পোল্ট্রি মুরগির খামারিরা। প্রতিদিন হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। কমে যাচ্ছে ডিম উৎপাদন। মৃত্যু ঝুঁকি এড়াতে অনেকে খামারের মুরগি অল্প দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
হিটস্ট্রোক ঝুঁকি থেকে মুরগি বাঁচাতে খামারের পরিবেশ ঠাণ্ডা রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
তাপদাহের প্রভাবে অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকে ছোট বড় প্রতিটি খামারে প্রতিদিন অন্তত ৩০ থেকে অর্ধশতাধিক মুরগি মারা যাচ্ছে। পাশাপাশি ডিম উৎপাদনের পরিমাণ কমেছে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। এতে খামারিদের ঘাড়ে পড়ছে উৎপাদন খরচের বাড়তি চাপ। তুলনামূলক বিক্রি দর কম বলে লোকসানের মুখে পড়ছেন তারা। হিটস্ট্রোকের ভয়ে কম দরেই বিক্রি করে দিচ্ছেন মুরগি।
সদর উপজেলার হাসাদী গ্রামের খামারি মো. মামুন বলেন, গেল কয়েক দিনের টানা তাপদাহের কারণে হিটস্ট্রোকে প্রতিদিন অনেক মুরগি মারা যাচ্ছে। লোডশেডিং বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপদ আরো বেড়েছে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই কম দামেই মুরগি বিক্রি করে দিয়েছি।
একই গ্রামের আরেক খামারি ফয়সাল বলেন, আমার শেডে ৩ হাজার কক মুরগি তুলেছি। কিন্তু গেল তিন দিনে গরমে প্রায় ২শ' মুরগি মারা গেছে। এভাবে চলতে থাকলে লাভতো দূরের কথা, মূলধনই হারাতে হবে।
খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গরমের কারণে মুরগি মরার পাশাপাশি কমেছে ডিমের উৎপাদন। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ডিম উৎপাদন হতো, তা কমে এখন ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে খামারে লোকসানের বোঝা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জ্যোর্তিময় ভৌমিক বলেন, গরমের হাত থেকে রক্ষা করতে খামার ঠাণ্ডা রাখতে হবে। প্রয়োজনে টিনের চালে চট বিছিয়ে পানি দিতে পারেন। তাছাড়া মুরগিকে স্ল্যাইনের পানি দিতে হবে। দুপুরে খাবার না খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি। তাপমাত্রা কমে আসলে ডিমের উৎপাদন স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, জেলায় নিবন্ধিত ১৫ শতাধিক হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। এরমধ্যে লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে ১৮৪টি, ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে ১ হাজার ৬৩টি এবং কক মুরগির খামার রয়েছে ১৫৮টি। তাছাড়া হাঁসের খামার রয়েছে শতাধিক। এসব খামার থেকে বছরে প্রায় ৩০ হাজার মে. টন মাংস ও ২৮ কোটি পিস ডিম উৎপাদন হয়ে থাকে।