দেশের সামুদ্রিক সীমানায় বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য আহরণ, মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা, পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিতে ছোট-বড় আট হাজার ৫০৫টি ফিশিং বোট আসছে ট্রাকিংয়ের আওতায়। এসব ফিশিংবোটে যুক্ত করা হয়েছে ভেসেল ট্রাকিং সিস্টেম। সমুদ্র মা মাছ রক্ষাসহ মাছ ধরা রোধে এগুলোকে প্রাথমিকভাবে ট্রাকিং সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক মনিষ কুমার মন্ডল।
সূত্র জানায়, সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের আওতায় এসব মাছ ধরার জাহাজকে যুক্ত করা হয়েছে। এবারই প্রথম এগুলোর মুভমেন্ট মৎস্য অধিদফতরে বসে মনিটরিং করা হবে। জানাযাবে তাদের অবস্থান ও গতিবিধি।
সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক মনিষ কুমার মন্ডল আরো বলেন, আশা করি দু’একদিনের মধ্যেই এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। তারপরেই মনিটরিংয়ের আওতায় আসবে এসব ফিশিং বোট। এর মধ্যে কিছু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আর অন্য গুলো মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে মনিটরিং করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ছোট ফিশিং বোটের (১ থেকে ১৩ গ্রস টন) ৮৫০০টিকে গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন (জিএসএম) যুক্ত করা হয়েছে। মিডিয়াম ও বড় বোটের (৪০ থেকে তদুর্ধ্ব গ্রস টন) ৫টিতে অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেমে (এআইএস) যুক্ত করা হয়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ভেসেল ট্রাকিং সিস্টেমে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। তবে অন্য মাছ ধরা জাহাজগুলোতেও ট্রাকিং সিস্টেম যুক্ত করতে বাধ্য করা হবে। পাশাপাশি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমাদের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্রগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকায় নিজেদের তদারকির মাধ্যমে মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন সম্ভব হবে। এখন এগুলো প্রকল্পে মাধ্যমে বিনামূল্যে দেয়া হলেও বাকি সমুদ্রগামী মাছ ধরা নৌযানে নিজ খরচে ভেসেল ট্রাকিং সিস্টেম বসাতে হবে মালিকদের। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এজন্য তাদের কিছু সময় বেধে দেওয়া হবে।
১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ:
সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা নিয়ে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে ভিত্তি ধরে আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুদ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইলিশ মাছ সুরক্ষায় বিজ্ঞানীরা পূর্ণিমা ও আমবস্যার সঙ্গে মিল রেখে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি, র্যাবসহ যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে, তারা সবাই নজর রাখবে; কোথাও থেকে ইলিশ যেন কেউ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন ও বিপণন করতে না পারে।
উল্লেখ্য, সরকারি নিবন্ধিত ছোট মাছ ধরার জাহাজ রয়েছে ৩০ হাজার ২৭ টি এবং বাণিজ্যিক বা বড় মাছ ধরা জাহাজ রয়েছে ২৫৩টি।























