ঢাকা   মঙ্গলবার
০৬ মে ২০২৫
২২ বৈশাখ ১৪৩২, ০৭ জ্বিলকদ ১৪৪৬

নদীতে বড় ইলিশ ধরা পড়ছে না,দাম আকাশছোঁয়া

Argi24

প্রকাশিত: ০৮:০৬, ৪ মে ২০২৫

নদীতে বড় ইলিশ ধরা পড়ছে না,দাম আকাশছোঁয়া

নদীতে বড় ইলিশ তেমন একটা ধরা পড়ছে না। মাঝারি আকারের ইলিশের দামও আকাশছোঁয়া। গতকাল চাঁদপুর বড় স্টেশন পাইকারি মাছবাজার।

স্বাদ ও গন্ধের ভিন্নতার দরুন চাঁদপুরের ইলিশের চাহিদা বছরজুড়েই থাকে। চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনার ইলিশের স্বাদ নিতে তাই সেখানে ছুটে যায় অনেকে। ইলিশের পোনা সংরক্ষণে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে দিন কয়েক আগেই। এরই মধ্যে চাঁদপুরে প্রধান পাইকারি মাছের আড়ত শহরের বড়স্টেশনে ক্রেতার ভিড় বাড়ছে।

গতকাল শনিবার এই বাজারে ইলিশের দাম বেশ চড়াই ছিল। বহু ভোজনরসিক বাজারে গিয়ে ইলিশ না কিনে দেখেই ফিরে গেছে।
বড়স্টেশন পাইকারি মাছবাজারে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনায় যে পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ে তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি ইলিশের চালান আসে উপকূল থেকে। বিশেষ করে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা থেকেই সবচেয়ে বেশি ইলিশ বিক্রির জন্য বেপারিরা বড়স্টেশনের আড়তে নিয়ে যান।

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শবেবরাত বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুম ভাদ্র ও আশ্বিনে। ওই দুই মাস সাগর ও নদী ইলিশে ভরপুর থাকে। জেলেরা জাল ফেললেই তাতে ধরা পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে চাঁদপুরের এই পাইকারি বাজারে।

ইলিশ কম।
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, এ বাজারে গতকাল এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ তিন হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকা, তার কম ওজনের ইলিশ দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ এবং ছোট আকারের ইলিশ এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকার নিচে বিক্রি করা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ী নূর আলম বলেন, ইলিশের বড় চালান না আসায় এখন প্রান্তিক জেলেদের কাছ থেকেই তা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এতে দামের সঙ্গে কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না।

ঢাকার শ্যামলী থেকে ইলিশ কিনতে চাঁদপুরে যান সরকারি চাকুরে নিজামুল হক।

পরিবারের সদস্যরা বায়না করেছে, চাঁদপুরে গিয়ে তাজা ইলিশ কেনার। কিন্তু বাজার ঘুরে দাম শুনে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে নিজামুলকে। জানালেন, এর চেয়ে ঢাকায় পাড়া-মহল্লায় ফেরি করে যে ইলিশ বিক্রি হয় সেগুলোর দামও অনেক কম। পাশের জেলা কুমিল্লা শহরের দক্ষিণ ঠাকুরপাড়া থেকে আরেক ক্রেতা মোবারক হোসেন  এসেছিলেন।  তিনি জানান, ছেলেমেয়েরা তাজা ইলিশ খাবে। তাই চাঁদপুরের এ বাজারে এলাম। দাম একটু বেশি। তার পরও ১৩ হাজার টাকা দিয়ে ৪টি ইলিশ কিনেছি। তাও সব মিলিয়ে সাড়ে তিন কেজি হবে।  এই বাজারের পাশে নদীর ঘাটে জেলেরা জানান, খুব কম মাছ নদীতে ধরা পড়ছে। রিঠা, আইড়, পাঙ্গাশ, পোয়া, চেঁউয়া জাতীয় কিছু মাছ জালে ধরা দিলেও ইলিশ দু-চারটি ধরা পড়ছে।

সদর উপজেলার হরিণাঘাটের জেলে বিল্লাল রাড়ি বলেন, একেকটি নৌকায় ইঞ্জিনের জ্বালানি খরচ প্রতিদিন তিন হাজার টাকা। তার সঙ্গে প্রতি নৌকায় পাঁচ-সাতজন জেলে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার মাছ ধরা না পড়লে খরচ ওঠে না। 

দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুকভরা আশা নিয়ে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকারে নেমেছেন জেলেরা। চার দিন ধরে নদীতে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে বেশির ভাগ জেলেকে। কোনো কোনো জালে পোয়া ও অন্যান্য মাছ পেলেও ইলিশ মিলছে না। গতকাল সকালে ভোলার ইলিশা চডারমাথা মাছঘাটে জেলে মো. গিয়াসউদ্দিন জানান, শনিবার ভোর রাত ৪টার দিকে তিনজন জেলেসহ নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে সকাল ১১টার দিকে একটি ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরেছেন। কাশেম মাঝি জানান, তিনি আটজন জেলে নিয়ে নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে ইলিশ পাননি। তুলাতুলি মাছ ঘাটের আড়তদার মো. ইউনুছ জানান, অভিযানের আগে তাঁর গদিতে দৈনিক দু-তিন লাখ টাকার মাছ কেনাবেচা হলেও অভিযানের শুরুর দিন মাত্র পাঁচ হাজার টাকার মাছ বেচাকেনা হয়েছে। আড়তদার মো. সাহাবউদ্দিন ফরাজী জানান, অভিযানের প্রথম দিন তাঁর গদিতে ২৫ হাজার টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে। দ্বিতীয় দিন ১৯ হাজার টাকা ও শনিবার মাত্র ১০ হাজার টাকার বিক্রি হয়েছে। এতে তাঁদের কর্মচারীদের চায়ের টাকাও হচ্ছে না।

এগ্রি২৪.টিভির বিদেশ, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হতে আগ্রহীরা সিভি  ও নিউজ পাঠান agri24.tv@gmail.com এই ইমেইলে

সর্বশেষ