ঢাকা   সোমবার
১০ নভেম্বর ২০২৫
২৫ কার্তিক ১৪৩২, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

বেবুন হত্যা করে খাওয়ানো হলো মাংসাশী প্রাণীদের

Argi24

প্রকাশিত: ১৭:৩৪, ৩০ জুলাই ২০২৫

বেবুন হত্যা করে খাওয়ানো হলো মাংসাশী প্রাণীদের

জার্মানির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ন্যুরেমবার্গের একটি চিড়িয়াখানায় জায়গা সংকটের কারণে ১২টি সুস্থ গিনিয়া বেবুন বানরকে হত্যা করা হয়েছে। শুধু তাই নয় পরে তাদের মৃতদেহ চিড়িয়াখানার মাংসাশী প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

চিড়িয়াখানার এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সাতজন প্রাণী অধিকার কর্মী চিড়িয়াখানায় ঢুকে বিক্ষোভ করলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিক্ষোভকারীদের একজন নারী চিড়িয়াখানার প্রবেশপথের সামনে মাটিতে নিজের হাত আঠা দিয়ে আটকেও দেন।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, বানরের খাঁচায় অতিরিক্ত ভিড়ের ফলে বেবুনদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা দেখা দেয় এবং পুনরায় তাদের কোথাও স্থানান্তরের কোনো বিকল্প পাওয়া যায়নি।

তবে প্রাণী সুরক্ষা আইনবিষয়ক জার্মান সংগঠন জার্মান লিগেল অ্যাসোসিয়েসন পর লিগ্যাল প্রোটেকশন ল-এর  প্রধান ক্রিস্টোফ মাইসাক বলেন, ‘প্রাণীদের অবাধ প্রজনন কোনোভাবেই তাদের হত্যা করার যৌক্তিকতা হতে পারে না।’

ন্যুরেমবার্গ চিড়িয়াখানা জানায়, ২০০৯ সালে নির্মিত বেবুন কমপ্লেক্সে ২৫টির বেশি বেবুন রাখার জায়গা নেই। কিন্তু বেবুনের সংখ্যা ৪০-এর বেশি হয়ে যাওয়ায় গত বছরই কিছু বেবুন হত্যার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।

অন্যান্য দেশের চিড়িয়াখানাগুলোও নতুন বেবুন নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিও কার্যকর হয়নি।
মঙ্গলবার সকালেই চিড়িয়াখানাটি কারিগরি কারণে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপরই বিক্ষোভকারীরা চিড়িয়াখানার গেট পেরিয়ে প্রবেশ করলে পুলিশ তাদের আটক করে। পরে চিড়িয়াখানা নিশ্চিত করে, তারা ১২টি বেবুন হত্যা করেছে, যেগুলো গর্ভবতী ছিল না বা কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণার অংশ ছিল না।

প্রাণীগুলোকে গুলি করে মারা হয়, দেহ থেকে গবেষণার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং পরে তাদের মৃতদেহ চিড়িয়াখানার হিংস্র প্রাণীদের খাওয়ানো হয়।

চিড়িয়াখানার পরিচালক ড্যাগ এনকে জানান, ‘এটি বহু বছরের চিন্তা-ভাবনার পর নেওয়া একটি কঠিন সিদ্ধান্ত।’

তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের শেষ উপায় হিসেবে কখনো কখনো প্রাণী হত্যা বৈধ হতে পারে।’ তার দাবি, এই সিদ্ধান্ত ইউরোপীয় চিড়িয়াখানা ও অ্যাকোয়ারিয়াম অ্যাসোসিয়েশন-এর নির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলোর ক্ষোভ

প্রো ওয়াইল্ডলাইফ নামে একটি প্রাণী সুরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, চিড়িয়াখানার এই পদক্ষেপ ছিল ‘পরিহারযোগ্য ও অবৈধ।

’সংগঠনটির একজন মুখপাত্র বলেন, ‘চিড়িয়াখানার দায়িত্বহীন ও টেকসইহীন প্রজনন নীতির কারণে সম্পূর্ণ সুস্থ প্রাণীগুলোকে হত্যা করতে হয়েছে।’
এর আগেও ইউরোপের চিড়িয়াখানাগুলোতে প্রাণী হত্যা নিয়ে বিতর্ক দেখা গেছে। ২০১৪ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন চিড়িয়াখানায় মারিয়াস নামের একটি জিরাফকে হত্যা করা হয়েছিল। কারণ তার জিনগত বৈশিষ্ট্য অন্যান্য জিরাফের সঙ্গে খুব কাছাকাছি ছিল। পরবর্তীতে জিরাফটির দেহ কাটাছেঁড়া ও সিংহদের খাওয়ানোর দৃশ্য অনলাইনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিল, যা বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।

সর্বশেষ