ঢাকা   বৃহস্পতিবার
১৩ নভেম্বর ২০২৫
২৮ কার্তিক ১৪৩২, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ইলিশের জায়গায় জালে ধরা পড়ছে বড় বড় পাঙ্গাশ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ১২ নভেম্বর ২০২৫

ইলিশের জায়গায় জালে ধরা পড়ছে বড় বড় পাঙ্গাশ

গত ২৫ অক্টোবর ২২ দিনের মা-ইলিশ রক্ষা অভিযান শেষে আশা নিয়ে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকারে নামেন জেলেরা। তাঁদের সেই আশা পূরণ হয়নি। কয়েক দিন ধরে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে বড় বড় পাঙ্গাশ মাছ ধরা পড়ছে তাঁদের জালে। এতে হতাশার মধ্যে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন এই জেলেরা। তাঁরা বলছেন, ইলিশের জায়গায় জালে ধরা পড়ছে বড় বড় পাঙ্গাশ। এসব পাঙ্গাশের ভালো দাম পেয়ে তাঁরা অত্যন্ত খুশি।

জানা গেছে, প্রতিবছর এই সময়ে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে পাঙ্গাশের দেখা মেলে। তবে আগের বছরগুলোর চেয়ে এবার এগুলোর ধরা পড়ার হার বেশি।

গতকাল মঙ্গলবার ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা, পাকারমাথা, তুলাতলী ও ভোলারখাল মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ঘাটে বিপুলসংখ্যক পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। বেশির ভাগ মাছের ওজন তিন থেকে চার কেজি। আর কোনো কোনোটির ওজন ১০-১২ কেজি। আকারভেদে প্রতিটি মাছ বিক্রি হয় দুই থেকে ছয় হাজার টাকায়।

তিন দিন ধরে প্রতিটি মাছঘাটে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি করা হয়েছে। এই মাছ ঢাকা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে আরো বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যাপারীরা।

ভোলার শিবপুর মাছঘাটের জেলে হাসান সাদেক জানান, মা-ইলিশ রক্ষা অভিযানের পর থেকে নদীতে ইলিশের দেখা তেমনটা মিলছে না। তিন দিন ধরে নদীতে পাঙ্গাশ ধরা পড়ছে বেশি। গতকাল তিনি নদীতে ইলিশ শিকারে গিয়ে বড় দুটি পাঙ্গাশ পেয়েছেন।

মাছ দুটি ঘাটে এনে চার হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি করেন। মাছ দুটির ওজন ছিল প্রায় আট কেজি। একই এলাকার জেলে মো. হারুন মাঝি জানান, তিনি নদীতে গিয়ে ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না। তবে দুটি পাঙ্গাশ ধরতে পেরেছেন। একটি তিন হাজার ৯০০ এবং অন্যটি এক হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছেন।

আরেক জেলে মো. আলমগীর মাঝি জানান, অভিযানের পর থেকে প্রায় সব জেলেই ধারদেনা ও সংসারের খরচ নিয়ে হতাশায় ছিলেন। কয়েক দিন ধরে নদীতে অনেক পাঙ্গাশ ধরা পড়ছে। তাতে জেলেদের হতাশা কাটছে। গতকাল সকালে মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে বড় তিনটি পাঙ্গাশ ধরতে পারেন তিনি। মাছটি তিনি ১০ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন।

তিনি জানান, বর্তমানে নদীতে যে পরিমাণ পাঙ্গাশ পাওয়া যাচ্ছে, তা গত চার-পাঁচ বছরে পাওয়া যায়নি। এভাবে আরো কিছুদিন পাঙ্গাশ ধরা পড়লে জেলেরা ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে উঠতে পারবে।

ভোলার তুলাতলী মাছঘাটের আড়তদার মো. জসিম উদ্দিন ব্যাপারী জানান, প্রতিবছরই ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে কমবেশি পাঙ্গাশ পাওয়া যায়। তবে এ বছর পরিমাণটা অনেক বেশি। গত সোমবার তুলাতলী ঘাটে বড় আকারের তিন শতাধিক পাঙ্গাশ বিক্রি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবারও প্রায় সমপরিমাণ পাঙ্গাশ বিক্রি হয়েছে ঘাটটিতে।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন জানান, সাধারণত ২২ দিনের মা-ইলিশ রক্ষা অভিযানের পর নদীতে ইলিশ মাছ বেশি একটা দেখা যায় না। কারণ ইলিশ ডিম ছেড়ে আবার সাগরে চলে যায়। তবে বর্তমানে ইলিশের স্থলে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে বড় পাঙ্গাশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি জেলেদের জন্য আশাব্যঞ্জক।

সর্বশেষ